রাঙামাটি । বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ , ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রাঙামাটি (সদর) প্রতিনিধিঃ-

প্রকাশিত: ১৫:০২, ৫ এপ্রিল ২০২০

রাঙামাটিতে ১০ টাকার চাল কিনতে ভিড়

রাঙামাটিতে ১০ টাকার চাল কিনতে ভিড়

রাঙামাটি (সদর) প্রতিনিধিঃ- বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশের দুস্থ, অসহায় ও খেটে খাওয়া দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ১০ টাকা কেজি দরে খোলা বাজারে (ওএমএস) চাল বিক্রি শুরু করেছে সরকার।

রোববার (৫ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে রাঙামাটি জেলার ৯টি ওয়ার্ডে এ চাল বিক্রি শুরু হয়েছে। চলবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত।

এদিকে নির্ধারিত সময়ের আগেই ৯টি ওয়ার্ডে ১০ টাকা দরে চাল নিতে মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। বর্তমানে দেশের করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ কার্যক্রম চলার কথা থাকলেও লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলো সেটি মানছেন না। গা ঘেঁষে ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ১০ টাকা দরে চাল নিচ্ছেন অসহায় মানুষগুলো। একাধিকবার নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখার কথা প্রশাসন থেকে মাইকে বলা হলেও কেউ তা মানছেন না। কে আগে চাউল নেবে সেটি তাদের মূল লক্ষ্য ছিল।

এ ব্যাপারে ১নং ওয়ার্ডের পুলিশের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আমরা শত চেষ্টা করেও সঠিকভাবে জনগণকে দূরত্ব বজায় রেখে লাইনে দাঁড় করাতে পারছি না। শত বুঝানোর পরও তারা গা ঘেঁষে দাঁড়াচ্ছেন।

এদিকে, সকাল ১০টায় এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ। এ সময় রাঙামাটি এনডিসি উত্তম কুমার দাশ। এ সময় সেনাবাহিনী ও পুলিশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে সকাল থেকে  এই কার্যক্রম পরিদর্শন করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উত্তম কুমার সহ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ। একটি পরিবারের একজনই ৫ কেজি চাল নিতে পারবেন। তবে সেটি অনেকেই মানছেন না। একই পরিবারের একাধিক সদস্যকে লাইনে দাঁড়িয়ে চাল নিতে দেখা গেছে। (ওএমএস)’র মাধ্যমে নির্দিষ্ট ৯ ওয়ার্ডের নির্দিষ্ট কেন্দ্র থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ পাঁচ কেজি করে চাল কিনতে পারছেন। জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ফটোকপি জমা দিয়ে চাল নিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে ১নং ওয়ার্ডের  ওএমএস ডিলার প্রতাপ দাশ  বলেন, এখান থেকে দুই মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হবে। প্রতিটি পরিবার থেকে একজন পাঁচ কেজি চাল সর্বোচ্চ নিতে পারবেন।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ জানান, আমরা বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় দিনমজুর শ্রমিক, কর্মহীন যত মানুষ আছে তাদের ঘরে ঘরে আমরা খাদ্য সামগ্রি ইতিমধ্যে পৌছে দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছি। ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রনালয় থেকে আমরা যে ত্রাণ পেয়েছি তা আমরা ঘরে ঘরে দিয়ে এসেছি। আর ১০ টাকা মুল্যের চাল এইতা আজকে থেকে বিতরণ কতরা শুরু হয়েছে। এইটা সপ্তাহে তিনদিন রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার দেওয়া হবে এবং প্রতিটি ওয়ার্ডে দুই মেট্রিক টন অর্থাৎ ৯টি ওয়ার্ডে প্রতিদিন ১৮ মেট্রিক টন দেওয়া হবে ওএমএস আন্ডারে,এটি সরকারের বিশেষ ওএমএস। আপনারা জানেন  আগে ওএমএস এর প্রতিকেজি চালের মুল্য ছিলো ৩০ টাকা। সরকার বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় দিনমজুর শ্রমিক, কর্মহীন মানুষের সাহায্যার্থে এখন প্রতিকেজি চাল ১০ টাকা নির্ধারন করে প্রতিটি ওয়ার্ডে ২ মেট্রিকটন প্রতিদিন দেওয়া হবে । অর্থাৎ প্রতিদিন প্রতিটি ওয়ার্ডে ৪০০ পরিবার এই চাল পাবে এই স্বপ্ল মূল্যের চাল।

তিনি আরো বলেন, আজকে রাঙামাটি জেলার ৯টি ওয়ার্ডে তিন হাজার ছয়শত পরিবারের হাতে ৫ কেজি করে ১০ টাকা মূল্যের চাল পৌছে যাবে এবং এরা আবার আগামী রবিবারে এই চাল নিতে পারবে। অর্থাৎ দেখা গেছে এক সপ্তাহে দশ হাজার আট শত পরিবারকে ৫কেজি করে ১০ টাকা দরে দিতে পারবেো।

গত ২৬ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এ সময়ে অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। শহর এলাকায় বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড প্রায় বন্ধ রয়েছে। এতে সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছেন শহরে বসবাসরত খেটে খাওয়া দরিদ্র জনগোষ্ঠী হকার, রিকশা, ভ্যানচালক, দিনমজুর, বাস ড্রাইভার ও হেলপার। যারা এ পরিস্থিতিতে শহরে রয়েছেন তাদের এ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে সরকারের মূল উদ্দেশ্য ।

আলোকিত রাঙামাটি

সম্পর্কিত বিষয়:

জনপ্রিয়