রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ , ১৪ চৈত্র ১৪৩০

লংগদু (রাঙামাটি) প্রতিনিধিঃ-

প্রকাশিত: ২০:২৩, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০

লংগদুতে পুলিশ পরিচয়ে অপহরণ! মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেল নির্মাণ শ্রমিক

লংগদুতে পুলিশ পরিচয়ে অপহরণ! মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেল নির্মাণ শ্রমিক

লংগদু (রাঙামাটি) প্রতিনিধিঃ- সাদা পোষাকধারী পুলিশ পরিচয় দিয়ে একজন নির্মাণ শ্রমিককে অপহরণের পর মুক্তিপণের বিনিময়ে ছাড়া পাওয়ার ঘটনা ঘটেছে রাঙামাটির লংগদু উপজেলায়। রবিবার রাত সাড় আটটায় লংগদু উপজেলর গাঁথাছড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে এ ঘটনার সাথে লংগদু থানা পুলিশ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওসি সৈয়দ মোহাম্মদ নূর। তিনি বলেন, অপহরণ ঘটনায় জড়িত ৩ জনকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। যারা যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধ আইনগত ব্যবস্থা  নেয়া হবে।

অপহরণের শিকার নির্মাণ শ্রমিক শমর আলী ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে বলেন, রবিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে অপরিচিত নাম্বার থেকে আমাকে ফোন করে গাঁথাছড়া মসজিদের সামনে আসতে বলেন একা। আমি মসজিদর সামন আসলে আমার কলার ধরে মটরসাইকেল ওঠায় পুলিশ পরিচয়ে ২ জন ব্যক্তি। এ সময় পুলিশক সহযোগিতা করা বাবুল, হাসান ও আলমগীর নামের স্থানীয় তিন ব্যক্তি। আমি চিৎকার করলে পুলিশ ২ জন আমাকে নিয়ে মটরসাইকেলে করে মুসলিমব্লক এলাকার সেগুনবাগানের গভীর জঙ্গল নিয়ে আসে। এখান আমাকে মারধর করে এবং একলক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। টাকা না দিলে ইয়াবা দিয়ে আমাকে ফাঁসানো হবে এমন হুমকি দেয়া হয়। এ সময় আমি টাকার জন্য আমার একজন ঘনিষ্ঠ আত্মীয় আজিজুলকে ফোন করি। পরবর্তীতে অপহরণকারীরা ফোন করে আজিজুলকে টাকা নিয়ে আসতে বলে।

এবার সেগুনবাগানর গভীর জঙ্গল থেকে আমাকে ফায়ার সার্ভিসের নির্মানাধীন ভবনে নিয়ে আসা হয়। এর কিছুক্ষণ পর আবার আমাকে ভাইট্টাপাড়া মাদ্রাসার মাঠ নিয়ে আসে অপহরণকারীরা। রাত প্রায় ১১টায় মুক্তিপনের টাকা দিয় আজিজুল হক ও কামাল হোসেন কমল দুইজন মিলে আমাকে উদ্ধার করেন।

শমর আলী আরো বলেন, নির্মাণ শ্রমিক বাবুল এবং আমার মধ্যে কাজ নিয়া বিরাধ আছে। এক সময় আমি বাবুলের অধীনে কাজ করতাম। এখন আমি নিজেই মিক্সার মেশিন কিনেছি এবং আলাদা কাজ করি। এ নিয়ে বাবুল আমার প্রতি ক্ষুব্ধ এবং এই বিরোধ থেকেই পুলিশ দিয়ে আমাকে ফাঁসাতে চেয়েছিল।

এ বিষয় জানতে কথা হয় আজিজুল হকর সাথে। তিনি বলেন, শমর আলী সম্পর্কে আমার জামাই হয়। রাতে তার ফোন পেয়ে জানতে পারি তাকে পুলিশ আটক করেছে এবং টাকা দাবী করছে। এরপর আমিও পুলিশের সাথে কথা বলি এবং মুক্ত করার জন্য আমার বন্ধু কামাল হোসেন কমলকে সাথে নিয়ে যাই। আমরা রাত ১১টার দিকে উপজেলার ভাইট্টাপাড়া মাদ্রাসা মাঠ পুলিশের সাথে যোগাযোগ করি। এসময় পুলিশ পরিচয় দুজন আমাদরে কাছ একলক্ষ টাকা দাবী করে। টাকা না দিলে ইয়াবা দিয়ে মাদক মামলায় চালান করে দিবে এমন হুমকি দেন তারা। অনক দর কষাকষির পর পাঁচ হাজার টাকায় শমর আলীক ছাড় দিতে রাজি হন অপহরণকারী পুলিশ পরিচয়কারী দুজন। এরপর টাকা নিয়ে শমর আলীক আমরা উদ্ধার করে নিয়ে আসি।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য জয়নাল হাসান বলেন, রবিবার রাত সাড় আটটার দিক পুলিশ পরিচয় ২ ব্যক্তি শমর আলী নামের একজন নির্মাণ শ্রমিককে ধরে নিয়ে গেছে এমন খবর পেয়ে আমি ছুটে আসি। গাঁথাছড়া বাজার এসে দেখি অপহরণকারীদের ৩ জন সহযাগীকে স্থানীয় জনতারা আটক করে রেখেছে। জনতার হাত থেকে তাদরে উদ্ধার করে একটি দোকান ঘরে ৩ জনকে আটক রাখি। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ রাত ১১টায় বাবুল, হাসান ও আলমগীর নামের ৩ জনকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যান। এছাড়াও শমর আলীকে টাকার বিনিময় উদ্ধার করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে অপহরণ ঘটনায় ব্যবহৃত পুলিশর মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ রয়েছে। 

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়