রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ , ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১৩:৩১, ২৮ মে ২০২০

সংক্রমণ ঝুঁকিমুক্ত বিশেষ চিকিৎসা বুথ তৈরি, চাহিদাও প্রচুর

সংক্রমণ ঝুঁকিমুক্ত বিশেষ চিকিৎসা বুথ তৈরি, চাহিদাও প্রচুর

বিশেষ ধরনের চিকিৎসা বুথ `নির্ণায়ক'


সংক্রমণের ঝুঁকিমুক্ত চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার পদক্ষেপ হিসেবে ‘আইসোলেশন চেম্বার ফর ডক্টরস্’-এর নকশা করেছিলেন স্থপতিরা। এবার সেই নকশার সঙ্গে আরও কিছু সুবিধা জুড়ে তৈরি করা হয়েছে কাক্ষিত চেম্বারের মডেল। ‘নির্ণায়ক’ নামের এই বিশেষ ধরনের চিকিৎসা বুথে পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) না পরেও পুরোপুরি নিরাপদ থেকে রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা যাবে। আলাদা করা যাবে করোনা ও অন্য রোগে আক্রান্তদের। রোগীকে ব্যবস্থাপত্রও দেওয়া যাবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধি দল এরইমধ্যে মডেল চেম্বারটি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে দাপ্তরিকভাবে অনুমোদন পাওয়ার পর শুরু হবে বাণিজ্যিক উৎপাদন। অবশ্য এরইমধ্যে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান`নির্ণায়ক’ স্থাপনের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

নগর পরিকল্পনাবিদ ও স্থপতি ইকবাল হাবিব সমকালকে বলেন, ‘শুধু করোনাকাল নয়, এরপরেও চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা এ ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে থেকে সেবা দিতে পারবেন। এতে রোগ নির্ণয়ের প্রাথমিক স্তরটি ঝুঁকিমুক্ত থাকবে। তাছাড়া পিপিই শতভাগ সুরক্ষা নিশ্চিত করে এমনটা বলা যায় না। এটা পরে দীর্ঘসময় কাজ করাও ক্লান্তিকর। সেক্ষেত্রে নির্ণায়ক এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে এটি পিপিইর চেয়ে বেশি সুরক্ষিত। ফলে এই চেম্বারে সাধারণ পোশাক পরেই সেবা দেওয়া যাবে। চিকিৎসকের কোনো সহকারীরও দরকার পড়বে না।

নির্ণায়ক আইসোলেশন চেম্বারের নকশা করেছে ভিত্তি স্থপতিবৃন্দ লিমিটেড নামে একটি স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান। এর পরিচালক ইকবাল হাবিব জানান, মূল নকশা তৈরির সময় দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে ও কম খরচে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এরপর বিভিন্ন সময়ে নতুন নতুন ভাবনা এসেছে। সেগুলোও আগের নকশার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। যেমন গাড়িতে লাগানো হয় এমন ‘এয়ার ফিল্টার’ ব্যবহার করতে গেলে খরচ অনেক বেশি পড়ে। তবে গবেষণার বরাত দিয়ে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সাধারণ গেঞ্জির কাপড়ের দুই বা ততোধিক স্তরযুক্ত ফিল্টার ভাইরাস ঠেকাতে সক্ষম। ফলে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। একজন বলেছেন, এর সঙ্গে প্রেসক্রিপশন দেওয়ার ব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো। সেটিও যুক্ত করা হয়েছে। আবার মাঝেমধ্যেই দেখা যায়, করোনা রোগী ভয়ে পালিয়ে যান। এক্ষেত্রে তাকে খুঁজে বের করার সুবিধার্থে আইসোলেশন চেম্বারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবি তুলে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমন আরও কোনো বিষয় সামনে এলে তাও যুক্ত করার চেষ্টা চালাবেন নির্মাতারা।

ইকবাল হাবিব বলেন, দেশের সব সরকারি হাসপাতালের প্রবেশপথে নির্ণায়ক চেম্বার স্থাপনের ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। অনুমোদন পেলেই শুরু হবে উৎপাদন। এর বাইরে বেসরকারি হাসপাতালসহ অন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও এটি স্থাপনে আগ্রহী। তবে ব্যক্তি উদ্যোগে যারা কিনবেন, তাদের কাছে উৎপাদন খরচের দ্বিগুণ দাম নেওয়া হবে। অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে তৈরি অপর চেম্বারটি কিনতে অপারগ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে বিনামূল্যে দেওয়া হবে।

নির্ণায়ক তৈরির অন্যতম উদ্যোক্তা উন্নয়নকর্মী সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন বলেন, এই চেম্বারের মাধ্যমে করোনা উপসর্গ থাকা ও অন্যান্য রোগীদের আলাদা করা যাবে বলে এর নাম দেওয়া হয়েছে নির্ণায়ক। দেশের দু-একটি স্থানে এমন চেম্বার তৈরি করা হয়েছে। নির্ণায়ক তৈরির ক্ষেত্রে সেগুলোর সুবিধা-অসুবিধা বিশ্লেষণ করে এটিকে আরও আধুনিক করার চেষ্টা চালিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। মডেল তৈরির পর এখন বলা যায় সেই চেষ্টা সফল হয়েছে। 

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়