রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ , ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১১:৩১, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

সাভারে নতুন চামড়াশিল্প নগরী করার পরিকল্পনা

সাভারে নতুন চামড়াশিল্প নগরী করার পরিকল্পনা

সাভারে নতুন চামড়াশিল্প নগরী করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। নতুন শিল্প পার্কে চামড়াজাত পণ্য সম্পর্কিত ট্যানারি এবং শিল্পগুলোকে স্থান দেওয়া হবে। একটি পূর্ণাঙ্গ চামড়াশিল্প নগরী স্থাপনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সরকার সাভারের হেমায়েতপুরে বিসিক ট্যানারি শিল্প নগরীর পাশে এ চামড়াশিল্প নগরী স্থাপনের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে।

সূত্র জানায়, চামড়াজাত পণ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত ট্যানারি এবং পশ্চাদপদ এবং ফরোয়ার্ড লিংকেজ শিল্পগুলোকে নতুন শিল্প পার্কে স্থান দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) কর্মকর্তা ও ট্যানারি উদ্যোক্তাদের মতে, প্রকল্পটি ৪০০ একর জমির ওপর বিস্তৃত চামড়াশিল্প নগরী হবে।

২০০৩ সালে সরকার পরিবেশ দূষণ রোধ ও বুড়িগঙ্গা নদী রক্ষার লক্ষ্যে রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে সব ট্যানারি স্থানান্তরিত করে হেমায়েতপুরে ২০০ একর জমিতে বিসিক ট্যানারি শিল্প নগরী নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিল। এ প্রকল্পের মেয়াদ বারবার বাড়ানো হলেও এখনো এর কাজ শেষ হয়নি। যদিও কয়েকটি ট্যানারি রাজধানী থেকে সেখানে স্থানান্তর করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার পস্ন্যান্ট (সিইটিপি) সংক্রান্ত জটিলতার কারণে তারা সমস্যায় পড়েছেন। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল এই বছরের জুনে শেষ হবে। এবার ধলেশ্বরী নদীর তীরে ট্যানারি শিল্প নগরীর পাশে আরও ২০০ একর জমিতে প্রস্তাবিত বিসিকের চামড়াশিল্প নগরী স্থাপন করা হবে। প্রায় ২৭০ একর জমির ওপর ২০০টি শিল্প পস্নট, প্রায় ২১ একর জমিতে একটি আধুনিক সিইটিপি এবং ৮ একর জমিতে একটি ৫০ মেগাওয়াট বিদু্যৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে।

বিসিকের সূত্র জানায়, ট্যানারিগুলো হাজারীবাগ থেকে হেমায়েতপুরে স্থানান্তরিত করা হলেও শ্রমিকদের জন্য আবাসন, প্রশিক্ষণ ও গবেষণার কোনো ব্যবস্থা নেই। চামড়াশিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যাকওয়ার্ড ও ফরয়ার্ড লিঙ্কেজ শিল্প জায়গা পায়নি। এ ছাড়া ট্যানারি শিল্প পার্কের সঙ্গে কোনো ফায়ার স্টেশন সার্ভিস নেই। বর্জ্যগুলো খোলা জায়গায় রাখা হয়। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার না থাকায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।

বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা) মো. রাশেদুর রহমান যায়যায়দিনকে বলেন, আগের ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত নয়, এমন জিনিসগুলো একটি পূর্ণাঙ্গ চামড়াশিল্প নগরী গড়ে তুলতে নতুন শিল্প নগরীর সঙ্গে যুক্ত করা হবে। তিনি জানান, নতুন প্রকল্পে শ্রমিকদের জন্য আবাসন, প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও পরীক্ষাগার সুবিধা স্থাপনের পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। আগের পরিকল্পনাটি অসম্পূর্ণ ছিল না, তবে কিছু বিষয় এতে অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি। নতুন প্রকল্পে তাদের জন্য স্থান বরাদ্দ দেওয়া হবে। নতুন চামড়াশিল্প নগরীতে শপিংমল এবং একটি বাণিজ্যিক কমপেস্নক্স থাকবে। এ ছাড়া বিদু্যৎ উৎপাদন কেন্দ্র, দুটি বৈদু্যতিক সাবস্টেশন, একটি গ্যাস স্টেশন, একটি কোল্ড স্টোরেজ, একটি আধুনিক সিইটিপি, একটি শক্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা এবং একটি ডাম্পিং ইয়ার্ড থাকবে। শিল্প নগরীটিতে একটি ডে কেয়ার সেন্টার, ক্লিনিক, ক্লাব, কনফারেন্স রুম, ব্যাংক ও বিমা, ফায়ার, থানা, খেলার মাঠ এবং পানি শোধনাগার পস্ন্যান্টও থাকবে। পরিকল্পনায় মহিলাদের ক্ষমতায়ন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিশ্রম্নতিবদ্ধ মহিলা উদ্যোক্তাদের জন্য ১০ শতাংশ বা ২৭ টি পস্নটের বরাদ্দ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে প্রায় ১ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শাহিন আহমেদ যায়যায়দিনকে বলেছেন, নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে চামড়াশিল্প নগরীকে একটি বিস্তৃত শিল্প নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। যে ট্যানারিগুলো স্থান পায়নি তারা এখানে স্থান পাবে। বাংলাদেশের চামড়া শিল্পগুলো পোশাক, জুতা, বেল্ট, ব্যাগ, জ্যাকেট, সুটকেস, মানিব্যাগ এবং কিছু অভিনব আইটেমের মতো চামড়াভিত্তিক পণ্য তৈরি করে। এই পণ্যগুলো দেশি এবং বিদেশি উভয় বাজারেই বিক্রি হয়। পাদুকা চামড়া শিল্পের দ্রম্নত বর্ধনশীল অংশ। বাংলাদেশ বিশ্বের মোট চামড়ার বাজারের প্রায় ১০ শতাংশ চাহিদা পূরণ করে।

সূত্রঃ যায়যায়দিন

আলোকিত রাঙামাটি

সর্বশেষ