রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ , ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রেকিং

পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির পথ দেখিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব : কাপ্তাইয়ে প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাপার্বত্যাঞ্চলের পরিস্থিতি অবনতি ঘটলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে : বীর বাহাদুর ঊশৈসিং এমপিসাজেকে নিহত ৯ জনের ময়নাতদন্ত শেষে হস্তান্তর, আহত ২ শ্রমিককে ঢাকায় প্রেরণকাপ্তাই হ্রদে ৩ মাসের জন্য মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা শুরুকেএনএফ প্রধান নাথান বমের স্ত্রী ‘নিখোঁজ’সাজেকে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯, পরিচয় মিলেছে ২ জনের!তীব্র তাপদাহ: জনগণকে সচেতন করতে প্রচারণায় নেমেছে রাঙামাটি স্বাস্থ্য বিভাগকাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫ ইউনিটের ৪টিই বন্ধ, উৎপাদন কমে ৩০ মেগাওয়াট

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১৭:০৮, ১৭ নভেম্বর ২০২০

সেনাবাহিনী সম্পর্কে মিথ্যা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

সেনাবাহিনী সম্পর্কে মিথ্যা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ- বান্দরবানে সেনাবাহিনী সম্পর্কে মিথ্যা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছে ম্রো সম্প্রদায়।

মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) বেলা ১১টা হতে ১২টা পর্যন্ত বান্দরবান শহরসহ মুক্ত মঞ্চের সামনে পার্বত্য বান্দরবানের ম্রো সম্প্রদায় একটি মানববন্ধন করে। 

উক্ত মানববন্ধনে ম্রো সম্প্রদায় জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অক্লান্ত পরিশ্রমে বান্দরবান পার্বত্য জেলা যখন অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং জনসাধারণের জীবনমান উন্নয়নের দ্বার প্রান্তে উপনীত তখনই কিছু স্বার্থান্বেষী কুচত্রুীমহল এই উন্নয়নধারাকে নষ্ট করার জন্য হীন প্রচেষ্ঠায় লিপ্ত রয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য এলাকার উন্নয়নে আর এন্ড আর হোল্ডিং গ্রুপ এর মাধ্যমে বান্দরবানের জীবন নগর চন্দ্রপাহাড়ে আধুনিক মানের পর্যটন কেন্দ্র নির্মানের উদ্যোগ নিয়েছে। এতে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল উক্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তথা ম্রো সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি করার জন্য নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা বলেন, ম্রো সম্প্রদায়ের কোন সদস্য এই মিথ্যা অপপ্রচারের সাথে জড়িত নয়। 

ম্রো সম্প্রদায় আরো বলেন, স্বাধীনতার পর পার্বত্য এলাকায় সমস্থ ম্রো সম্প্রদায় সেনাবাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই অঞ্চলে শান্তির জন্য অনন্য ভূমিকা পালন করছে। ফলে সেনাবাহিনীর সাথে ম্রো'দের ভাল সম্পর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ম্রো সম্প্রদায়ের আত্মসামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী ম্রো ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার সুবিধার্থে স্কুল ও হোস্টেল তৈরী  করেছে, লেখা পড়ার জন্য শিক্ষা উপকরণ প্রদান করছে। উচ্চ শিক্ষার জন্য ম্রো যুবক-যুবতীদের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি সহ আর্থিক সহায়তা প্রদান করে আসছে। অসহায়, দুঃস্থ ম্রো জনগণের জন্য ঘর-বাড়ী তৈরী করছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় প্রচুর পরিমাণে ম্রো সদস্যকে আনসার বাহিনীতে চাকুরী প্রদান করা হয়েছে। ম্রো ছেলে-মেয়েদের যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী প্রদান করছে। ম্রো যুবকদের কে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন টেকনিক্যাল প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে চাকুরী ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অসহায় গরীব ম্রো সদস্যদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সেনাবাহিনী কর্তৃক গবাদি পশু, আর্থিক সহায়তা, কৃষি কাজে উপকরণ হিসেবে বীজ, সার ইত্যাদি প্রদান করছে। অসহায় গরীব ম্রো ও অন্যান্য সম্প্রদায়কে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য সেনাবাহিনী বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকায় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ প্রদান করছে। 

ম্রো সম্প্রদায় উক্ত বিষয়টিকে বাংলাদেশের জনগণের সামনে আরো পরিস্কার করতে গিয়ে বলেন, বান্দরবান পাবর্ত্য এলাকায় সেনাবাহিনী ও সর্বস্তরের মানুষ যখন মিলেমিশে কাজ করে  ঠিক তখন কিছু অসৎ স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের সুবিধা আদায়ের লক্ষে বান্দরবানে এই উন্নয়নের ধারাকে বিঘ্ন করার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তথা ম্রোদের জড়িয়ে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা, অপপ্রচার করে আসছে। স্বার্থন্বেষী মহল বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে  চিম্বুক পাহাড়ে অবস্থিত জীবন নগর চন্দ্রপাহাড়ে পর্যটন স্পটকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। সেনাবাহিনী কর্তৃক জীবন নগর চন্দ্রপাহাড়ে নাকি ৮০০-১০০০ একর জায়গা দখল করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রকৃত পক্ষে উক্ত জায়গাটির পরিমাণ মাত্র ২০ একর এবং ইহা একটি তৃতীয় শ্রেণীর জায়গা যা বসবাসের অযোগ্য। এই জায়গাটি বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ২০১৫ সালে নিজে স্বাক্ষর করে কাজ প্রদান করেন। এই নির্মাণর ও বসবাসের অযোগ্য জায়গায় আর এন্ড আর গ্রুপ ও সেনাবাহিনী যৌথ উদ্যোগে উন্নতমানের পর্যটন কেন্দ্র করার জন্য কাজ করছে। এই খবরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মিডিয়াতে যে ১০,০০০ (দশ হাজার) লোকের ভূমিহীন হওয়ার অপপ্রচার চালানো হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বর্তমানে উক্ত জায়গাটিতে কোন রাস্তা ঘাট, বিদ্যুৎ সংযোগ তথা কোন নাগরিক সুযোগ সুবিধা নেই। উক্ত এলাকাতে বর্তমানে কোন লোক বসবাসও করছে না। ঐ এলাকায় পর্যটন কেন্দ্র স্থাপিত হলে পরিবেশের উপর কোন প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নাই বরং ম্রো সম্প্রদায়ের আরো নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

ম্রো সম্প্রদায় আরো বলেন, আমরা গতকালকেই দেখলাম ৬২ জন বুদ্ধিজীবি এই ইস্যুটি নিয়ে বলেছেন যে, বিপুল সংখ্যক লোকজন নাকি ভূমিহীন হয়ে যাবে। আমরা তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, তাঁদের বান্দরবান সম্পর্কে কোন ধারণাই নেই। এখানে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করছে। যার সাথে তথাকথিত বুদ্ধিজীবিগণও সুর মিলাচ্ছে। আমরা সেই ৬২ জন শ্রদ্ধেয় বুদ্ধিজীবিকে বিনীত অনুরোধ করছি, তারা যেন এই এলাকার মানুষের বাস্তব চিত্র দেখার জন্য এলাকাটি এসে ঘুরে যান।

ম্রো সম্প্রদায় বলেন, স্বার্থান্বেষী মহল কর্তৃক পর্যটন কেন্দ্র তৈরী সংক্রামত যে, কাল্পনিক তথ্য ও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, তার তীব্র নিন্দা জানাই এবং অনতিবিলম্বে এই অপপ্রচার বন্ধ করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট বিনীত অনুরোধ করছি।

আলোকিত রাঙামাটি

সম্পর্কিত বিষয়:

জনপ্রিয়