রাঙামাটি । শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ , ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১৪:১৭, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

২০৯ কোটি টাকার প্রকল্পে লাখো যুবকের কর্মসংস্থান

২০৯ কোটি টাকার প্রকল্পে লাখো যুবকের কর্মসংস্থান
পরিবেশবান্ধব বায়োগ্যাস প্লান্টের গ্যাসের চুলায় রান্না করছেন গৃহবধূ- ফাইল ফটো

২০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্যাপক প্রযুক্তি নির্ভর সমন্বিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা (৩য় পর্যায়) প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মেয়াদি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে যুব উন্নয়ন অধিদফতর। এতে পরিবেশবান্ধব উপায়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে লাখো যুবক।

যুব উন্নয়ন অধিদফতরের পরিচালক (যুব উন্নয়ন ও ঋণ শাখা) মাসুদা আকন্দ বলেন, সমন্বিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা (৩য় পর্যায়) প্রকল্পের মাধ্যমে যুবকদের কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন ও পরিবেশ উন্নয়ন করা হবে। খামারের পরিবেশ ঠিক রাখার প্রশিক্ষণ দেয়ার পাশাপাশি জ্বালানি ও জৈব সার তৈরি হবে। এর মাধ্যমে পরিবেশ দূষণমুক্ত রেখে লাখো যুবকের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

যুবসমাজকে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে যুব সম্পদে রূপান্তর করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিতকরণ ও উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান এবং আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। প্রকল্পটি ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে মিল রয়েছে।

গ্রামীণ যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি; সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ অনুযায়ী আধুনিক নাগরিক সুবিধা সম্প্রসারণরে লক্ষ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের সম্ভাবনা উন্মোচন করা হবে। নারীদের জন্য ধোঁয়াহীন, আরামদায়ক, স্বাস্থ্যসম্মত এবং সময় সাশ্রয়ী রান্নার সুযোগ সৃষ্টি করা হবে, যাতে তারা এ অতিরিক্তি সময় অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ব্যয় করতে পারে। এছাড়া রান্নার জন্য জ্বালানি কাঠের ব্যবহার কমিয়ে আনা এবং বন উজাড় রোধ করে দেশের উন্নয়ন করা; বর্জ্য ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষি জমির জন্য জৈব সার উৎপাদন; বায়োগ্যাস প্লান্টে পচনশীল বর্জ্যের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকায় পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং দূষণমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়তা করা হবে। খামারে বায়োগ্যাস পদ্ধতি প্রবর্তন সুবিধা সম্পর্কে যুবকদের সচেতন করাও প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য।

সমন্বিত খামারে বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনের মাধ্যমে বিকল্প জ্বালানি হিসেবে উৎপাদিত বায়োগ্যাসে আরামদায়ক, স্বাস্থ্যসম্মত এবং সময় সাশ্রয়ী রান্নার সুযোগ সৃষ্টি করা, বিদ্যুৎ উৎপাদন করা, গবাদিপশু ও মুরগির খামারে দুর্গন্ধ ও দূষণমুক্ত স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ সৃষ্টি করা ও উন্নতমানের জৈব সার উৎপাদন করা সম্ভব।  

উল্লেখ্য, জাপান সরকারের অর্থায়নে প্রথম পর্যায়ে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০৬ সালের জুলাই থেকে ২০১১ মেয়াদে ১০টি উপজেলায় বাস্তবায়ন করা হয় বায়োগ্যাস প্লান্ট। ওই পর্যায়ে ৪ হাজার ৩৮টি বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করা হয়। ফলে ৫ হাজার ৯৭০ জন যুবক জাপান সরকারের অর্থায়নের উপকারভোগী ছিলেন।

সরকারের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) ইমপ্যাক্ট (ফেজ-১) প্রকল্প মূল্যায়ন করে। এর ভিত্তিতে সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে মোট ৭৫ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্প নেয়া হয়। 

২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ মেয়াদে ‘দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে ব্যাপক প্রযুক্তি নির্ভর সমন্বিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা (২য় পর্যায়)’ শিরোনামে প্রকল্প সফলভাবে দেশের ৬১টি জেলার ৬৬টি উপজেলায় বাস্তবায়ন করা হয়। প্রকল্পের ২য় পর্যায়ে মোট ৩১ হাজার বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। 

এরই ধারাবাহিকতায় স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে প্রকল্পটি সম্প্রসারণের জন্য প্রকল্পের ৩য় পর্যায় বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমসমূহ হচ্ছে ৬৪ হাজার বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন। খামার স্থাপনের মাধ্যমে ১ লাখ ২৮ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।  

এছাড়া ১ লাখ ৪৮ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান ও কর্মশালা আয়োজন ও ১২৫ কোটি টাকার রিভলভিং ক্রেডিট ফান্ড পরিচালনা, যানবাহন ক্রয় যন্ত্রপাতি ক্রয়; এবং অন্যান্য কাজ পরিচালনা করা হবে। দেশের ৬৪টি জেলার ৪৯২টি উপজেলায় এটা নেয়া হচ্ছে। বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনের মাধ্যমে গ্রামীণ যুবদের কর্মসংস্থান এবং আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখার বিবেচনায় দেশের ৬৪টি জেলার সব উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়