রাঙামাটি । বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ , ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রাঙামাটি (সদর) প্রতিনিধিঃ-

প্রকাশিত: ২১:৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯

‍‍‌‌‌‌‌‌‌‘রাঙামাটির পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে পরিষদ কাজ করে যাচ্ছে’

‍‍‌‌‌‌‌‌‌‘রাঙামাটির পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে পরিষদ কাজ করে যাচ্ছে’

পার্বত্য রাঙামাটির পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে পরিষদ কাজ করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করে রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেন, মেঘের রাজ্য সাজেকে ঘুরতে আসা পর্যটকদের ভ্রমণ নিরাপদ ও আনন্দঘন করতে পরিষদের পক্ষ থেকে আরো কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। এইসব পরিকল্পনা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে ঘুরতে আসা পর্যটকরা আরো অনেক বেশী উপকার পাবে।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সভাকক্ষ (এনেক্স ভবন) এ আয়োজিত রাঙামাটি পার্বত্য জেলা উন্নয়ন কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা এসব কথা বলেন।

পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা অরুনেন্দু ত্রিপুরার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় রাঙামাটি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) শারমিন আলম, রাঙামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ, সিভিল সার্জন (ভাঃ) ডাঃ নীহার রঞ্জন নন্দী’সহ পরিষদের হস্তান্তরিত বিভাগের কর্মকর্তা, জেলা ও উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। 

সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা আরো বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা যদি সাজেকের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসে তাহলে জেলা পরিষদ তাদের পাশে থাকবে। তিনি রাঙামাটির পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে অন্যান্যদেরও এগিয়ে আসার আহবান জানান। তিনি প্রতিটি উন্নয়ন সভায় উপস্থিত থেকে এ জেলার শান্তি শৃংখলা ও উন্নয়নে সুপরামর্শ ও মতামত প্রদানের জন্য সকলকে আহ্বান জানান।

সভায় রাঙামাটি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) শারমিন আলম বলেন, বর্তমানে রাঙামাটিতে পর্যটকদের আগমন বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই এখানকার রাস্তার ধরণ অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের রাস্তার মোড়ে মোড়ে সড়ক বাতি ও নির্দেশনামূলক সাইনবোর্ড লাগানোর অনুরোধ জানান। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবার জন্য রাঙ্গামাটিতে নব নিয়োগকৃত চিকিৎসকরা যাতে এখানে থেকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে এবিষয়ে নজর রাখার জন্য তিনি সিভিল সার্জনকে অনুরোধ জানান। পাশাপাশি এ জেলার ৬টি উপজেলা নদীপথে হওয়ায় ওয়াটার এম্বুলেন্স সার্ভিস চালুর ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি আর্কষণের জন্য সংশ্লিষ্টদের মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণের পরামর্শ প্রদান করেন। 

রাঙামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ বলেন, দেশের প্রতিটি উন্নয়ন কর্মকান্ড নির্বিঘেœ সম্পাদনে আইন শৃংখলা বাহিনীর সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। তাই এ জেলার সার্বিক উন্নয়নে যেকোন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের কারণে বাধাগ্রস্থ হলে আইন শৃংখলা বাহিনীকে অবগত করার পরামর্শ দেন। 

গণপূর্ত বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ আনিসুল হক বলেন, লংগদু ও রাজস্থলী উপজেলার ফায়ার স্টেশনের কাজ চলমান রয়েছে। যে সমস্ত উপজেলায় ফায়ার স্টেশন নির্মাণ কাজ করার কথা রয়েছে সেগুলো শীঘ্রই করা হবে। তিনি বলেন, আগামী জানুয়ারী মাসেই জেনারেল হাসপাতালের ২৫০ বেড নির্মাণের কাজ শুরু হবে। 

তিনটি পার্বত্য জেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পের উপসহকারী প্রকৌশলী এর আর মুজিব বলেন, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, নানিয়ারচর ও লংগদু উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ৩৩/১১ কেভি লাইন সঞ্চালনের কাজ চলছে। এখনো যেসব স্থানে ৩৩/১১ কেভি লাইন সচল হয়নি সেখানে কাজ করা হবে। তিনি বলেন, পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের বিষয়ে গত ২৫ ডিসেম্বর রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে রাঙামাটির সংসদ সদস্য ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা যে সমস্ত এলাকায় জরুরীভিত্তিতে বিদ্যুৎ প্রয়োজন সেগুলোর তালিকা প্রদান করেছে। 

এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তালেব চৌধুরী বলেন, ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্থ কাপ্তাই-আসামবস্তী ১৮ কিলোমিটার সড়ক ১৮ফুট প্রশস্থ করে সংস্কারের কাজ শীঘ্রই করা হবে। তিনি বলেন, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় রাস্তা ও ব্রীজ নির্মাণ কাজে কিছু সন্ত্রাসী বাধাগ্রস্থ করছে। এ বিষয়ে আইন-শৃংখলা বাহিনী, প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা কামনা করেন। 

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ খলিলুর রহমান জানান, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেশের প্রতিটি উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মাণের আওতায় রাঙামাটিতে ১১টি মসজিদ নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮টি মসজিদ নির্মাণ কাজ চলছে। বাকী ৩টি মডেল মসজিদ নির্মাণের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। এছাড়া প্রতিটি মসজিদে সন্ত্রাস, বাল্য বিবাহ রোধে প্রচার প্রচারণা করা হচ্ছে এবং জেলার ৬২৯টি মসজিদে বই প্রেরণ করা হয়ে গেছে যা বছরের ১ম দিন শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। 

এছাড়া উত্তর, দক্ষিণ বন বিভাগ, ঝুম নিয়ন্ত্রণ, ইউএসএফ ও পাল্পউড বাগান বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তাগণ জানান, মুজিব বর্ষকে সামনে রেখে সারাদেশে কয়েক কোটি গাছের চারা বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। প্রতি উপজেলায় ২০৩২৫টি গাছের চারা বিতরণের লক্ষ্যে বনবিভাগ কাজ করে যাচ্ছে।

সভায় উপস্থিত অন্যান্য বিভাগীয় কর্মকর্তাগণ স্ব স্ব বিভাগের কার্যক্রম উপস্থাপন করেন।

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়